বাংলাদেশ শেষবার ওডিআই বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব খেলেছিল ১৯৯৭ সালে। সেবার মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথমবার জায়গা করে নিয়েছিল আকরাম খানের দল। এর পরপরই আইসিসির ওয়ানডে স্ট্যাটাস ও টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জিত হওয়ায় এবং র্যাংকিং ভালো থাকায় আর কোনো বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করতে হয়নি বাংলাদেশ দলকে। ২৭ বছর পর বাংলাদেশের আবারও বাছাইপর্ব খেলে বিশ্বকাপের টিকিট কাটতে হবে কিনা এরকম শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০২৭ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে সাউথ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে ওডিআই বিশ্বকাপের ১৪তম আসর। মোট ১৪ দলের বিশ্বকাপে আয়োজক দেশ হিসেবে সাউথ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সরাসরি মূলপর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। এছাড়া র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা প্রথম আটটি দলও সরাসরি মূল পর্বে চলে যাবে। বাকি চারটি পজিশনের জন্য আয়োজক নামিবিয়া সহ অন্যান্য দলগুলোকে বাছাইপর্ব উতরিয়ে মূলপর্বে আসতে হবে। র্যাংকিংয়ের কাট-অফ টাইম রাখা হয়েছে ২০২৭ সালের ৩১শে মার্চ। তবে আয়োজক দলের কোন দেশ যদি র্যাংকিংয়ে প্রথম আট দলের মধ্যে থাকে তবে ৯ম এমনকি ১০ম দলেরও সরাসরি মূলপর্বে খেলার সুযোগ থাকবে।
সাম্প্রতিক শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ শেষে আইসিসির র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম। কিছুদিন আগেই যেটা ছিল ১০ম । শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতে রেটিং পয়েন্টে সামান্য পরিবর্তন হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বর্তমান রেটিং ৭৭ আর পয়েন্ট ২৪৬৫। একই রেটিং ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও, তবে পয়েন্ট কিছুটা কম থাকায় তাদের অবস্থান বাংলাদেশের পরে। ৭ম ও ৮ম স্থানে থাকা আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের রেটিং যথাক্রমে ৯১ ও ৮৮, বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজও ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ছাড়ছে।
যদিও বিশ্বকাপের এখনো অনেক বাকি এবং প্রত্যেকটি দলেরই সুযোগ আছে র্যাংকিং বাড়িয়ে নেবার তারপরও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সের কারণে ভক্ত-সমর্থকদের আলোচনায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলা নিয়ে এখনি কানাঘুষা চলছে! বিশ্বকাপের আগে ২০২৭ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত আইসিসির সূচি অনুযায়ী ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের সাথে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ খেলার কথা রয়েছে। এর মধ্যে আরো দু-একটি সিরিজও নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি সিরিজগুলোতে কিছু ম্যাচ জিতে র্যাংকিংয়ে আটের মধ্যে থাকতে পারে তাহলে সরাসরি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই। এমনকি ৯ম স্থানে থাকলেও আয়োজক সাউথ আফ্রিকা সেরা আটে থাকলে সেক্ষেত্রেও সরাসরি মূলপর্বে খেলার সুযোগ থাকবে। তবে যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা অন্য কোনো দল বাংলাদেশকে টপকিয়ে ফেলে আর বাংলাদেশ ১০ম স্থানে চলে যায় তাহলে বাছাইপর্ব খেলেই বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে হবে!
গত কয়েক বিশ্বকাপে ফরম্যাট পরিবর্তিত হয়েছে কয়েকবার। ১২ দলের টুর্নামেন্ট থেকে ১৪ দল এমনকি ১০ দলের অংশগ্রহণেও অনুষ্ঠিত হয়েছে ওডিআই বিশ্বকাপ। ২০১৯ এবং ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ হয়েছে ১০ দলের। ঐ দুই বিশ্বকাপেও বাংলাদেশ সরাসরি কোয়ালিফাই করেছে। তবে এবার পঞ্চপাণ্ডব ছাড়া বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট কাটতে পারে কিনা তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০২৭ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত!
0 মন্তব্যসমূহ